শিশুকালের অবুঝ আনন্দটা আজো আমার পিছু ছাড়েনি। ঝাপসা মনে পড়ে, বয়স হয়ত আড়াই হবে, মাকে ছেড়ে নানীজানের সাথে পাড়ি জমালাম শহরে। কারণ, আর কিছু নয়, শুধুই ভালবাসা, আদর, অতিস্নেহ। আজ ওনাদের কেউ নেই জগতের আলোবায়ুতে, শুধু ভালবাসাগুলো বাতাসে বাতাসে ঘুরাফেরা করে আমার আশপাশে। কিন্তু এখন আর আমি ওদের কিছুতেই ছুঁতে পারি না। মানুষ মরে যাওয়ার সাথে সাথে আরসব বিতরণের সাথে সাথে ভালবাসার বন্টনী সিন্দুকেও তালা দিয়ে যান; তালা পড়ে যায়। সুদীর্ঘ বার বছরের বিচ্ছিন্ন জীবনে হৃদয়টা এখন যেন বৈশাখের চৌচির মাঠের মত খণ্ডবিখণ্ড, যেন লাঙ্গলচষা আবাদোন্মুখ জমি; কিন্তু অনাবাদীই রয়ে গেল। মাঝে মাঝে অস্থির হয়ে পড়ি, অবরুদ্ধতাকে আর কতদিন চেপে রাখবো দীর্ঘশ্বাসে। ঘরে ফিরে মায়ের মুখ, বাবার রাঙানো চোখ, ছোট ভাইয়ের ফাজলামী আর ছোট্ট বোনের দুষ্ট হাসি যারা পায়; তাদেরে আজকাল খুব ঈর্ষা হয়। বারটি বছরের বিচ্ছিনতা না দিলে জীবন আমাকে কিসে বঞ্চিত করতো; আর অবিচ্ছিন্নতায় কি অমিয়ানন্দ পেতাম; দু'চোখের বন্ধ পাতায় তার হিসেব খুব ঝাপসাই দেখি।
আমার আপন মনে, আপন ঘরে, আপন পৃথিবী